Homepage 64th Issue Editorial পরিবিষয়ী কবিতা Contact Us Contact Us

Poems by Aritra Chattopadhyay | Kaurab ONLINE 64/2024

 

 

অরিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা

 

 

প্রোফ্যানিটি, হায়

 

প্রোফ্যানিটি হায়, তোমার এই অশ্লীলপ্রিয়তা

আজও পেয়ে বসে অনায়াসে, চায়ের কাপে

কয়েকটি চল্লিশোর্ধ যুবার জীবন বিষয়ে তরল রসিকতা

পাশের টেবিল থেকে ভেসে আসা তাদের চটুল বিলাপ,

তোমাকে আকর্ষণ করে, হাওয়ায় আঁকিবুঁকি কেটে

ভেসে আসা কারো সরল স্বীকারোক্তি, হেসে উঠে বলা-

আজকাল পাঁচ হাজার টাকার ওষুধ লাগে মাসে,

তা বলে কি দীঘা যাব না? -আদতে উচিৎ নয়

তবু এসব তুমি খুব মন দিয়ে শোনো

আর তার উদাসীনতার প্রতি অভিবাদন জানাও -

উদাসীন, অক্টোবরের শহরে কয়েক মুহূর্তের জন্য এসে

উদাসীন শব্দটা চোখে মুখে বড় বেশি ঝাপটা দিচ্ছে আজ

যেন আর একটু পরে একেবারে নেই হয়ে যাবে

জেনেও- বাসস্টপে, প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে কেউ

বুকে করে তাদের চোরাগোপ্তা আকাঙ্খাএসব দূর থেকে

বুঝে ফেলার মধ্যেও জানি একটা সূক্ষ্ম অশ্লীলতা আছে-

যে শহর কেবলই অতীত হয়ে আসে, তবুও সেখানে কোথাও

রয়ে যেতে যেতে- এসবও হয়ত খুব বেশিরকম চাওয়া-

উদাসীন এই শহরে রাতের পর রাত, যুবক যুবতীরা যখন

জেগে রয়েছে ঠায়, নীরবে অপেক্ষা করে সুদিনের -

তাদের জমে থাকা প্রত্যাশা আর ক্রমবর্ধমান খিদের পাশে

কেবলই নির্বিকার লাল দাগ টেনে দিয়ে চলে যায় কারা-

প্রোফ্যানিটি হায়, এই শহরের যাবতীয় অশ্লীলপ্রিয়তা

কেটে গেলে ঠিক সেরে উঠবে একদিন, আজও যারা ভাবে

স্থিতাবস্থা কেটে যাবে তুমি চলে এলেই, তারপর-

তারপর আবার, কোথাও ঠিক থেকে যাওয়ার সামান্য দাবী দাওয়া

নিয়ে অবিরল লড়ে যাওয়া এইসব মানুষেরা, তুমি খুব চাও

যাতে আরও কয়েক দশক অনায়াসে বেঁচেবর্তে থাকে

 

 

চারজন মোমরঙা মেয়ে

 

চারজন মোমরঙা মেয়ে

অপেক্ষা করে করে একদিন

পুরোটাই মোমের হয়ে গেল,

তাদের মসৃণ ত্বক-

অন্তরালে কিছু জটিল গ্রন্থি,

মজ্জা ও হাড়ের বিন্যাস

গলে যাওয়ার আগে

এখনো জমাট বেঁধে আছে

সম্ভবত কোন স্পর্শের আশায়-

স্পর্শ- মোলায়েম থেকে তীব্রতর

হতে হতে আঙ্গুলগুলো একদিন

বেমালুম বদলে গেল স্ক্যালপেলে -

মোমের অবশ্য কোন স্নায়ু নেই

তবু ছুঁয়ে থাকার প্রত্যাশা বুকে

ক্রমশ নিপুণভাবে কর্তিত হয়ে যাওয়ার

যে বাস্তবতা- তার মধ্যে কোথাও

একটা গূঢ় প্রতারণা আছে  

চারজন মোমরঙা নারী- প্রতারণা জমে

জমে একেবারে মোমেরই হয়ে গেছে

চাঁদের মাটির মত তাদের গহীনে আজ

আর কোন জল অবশিষ্ট নেই-

কেবল ত্বকের ফাটল হতে উঠে আসা

কিছু চাপা দীর্ঘশ্বাসশিখা নিভে যাওয়ার

পরেও শরীর কেঁপে ওঠে

 

 

 

সূর্য পেরিয়ে আরেকটা সূর্য

 

সূর্য পেরিয়ে আরেকটা সূর্য উঠছে দূরে

সেখানে জন্ম হচ্ছে তার একটা ছবি

খুব মনোযোগ দিয়ে একটা বাচ্চা আঁকছে এখন-

বাড়ির মতন দেখতে একটা ফুলদানি

সেখানে আসবে বলে কেউ মোম জ্বেলে গেছে

কত কতদিন আগে থেকে

তার বন্ধ দরজাটা আজও খুলতে চাইছে কেউ -

ভালো করে দেখো, এই ছবিটায় দুটো সূর্য’ –

একথা তুমি আবারও বলছ, তোমার বিস্ময়

বুঝতে পারি আমি, শিশুদের ছবি আদতেই

কখনো সোভিয়েত শিল্পীদের থেকেও রহস্যময়-

যেমন রহস্যময়, জীবনের বিবিধ খুঁটিনাটি-

বেলা বারোটা, কাঠের টেবিল বেয়ে দুটো পিঁপড়ে

হাঁটছিল, তাদের আকস্মিক মৃত্যুর ভেতর আমি

সামান্য একটা তেলতেলে গন্ধ পেলাম

বাতাসার খোঁজে পুরনো কুলুঙ্গির ভেতর যেরকম

পাওয়া যেত এককালে, কোন হিসেবে এই ঘ্রাণ

শেষপর্যন্ত মৃত্যুর হয়ে উঠলএসব নিয়েও

কিন্তু আমাদের আলোচনা হতে পারে খানিক

বিশেষত সেসব রাতগুলোয় যখন মুখোমুখি হই

আড়ষ্টভাবে, একে অপরকে কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলি-

আসলে সেভাবে বলার কিছু নেই তো