কবিতা
শতানীক
রায়
অখিল
কবিতা
ধরো,
এই যে ভোর
শুরু হচ্ছে,
এখন সেটাই
কবিতা। একটা
সমগ্র কবিতা
দিয়ে শুরু হল।
১
সবাই
সবাইকে
দ্যাখে। অথচ
দ্যাখার
কবিতা দিয়ে আজ
কবিতাই লেখা
হবে। অথচ,
অথচ
মানুষের দিকে
মানুষ আঁকা
হল। হে
আশ্চর্য নীল, আজ
একরকম
পুরাতনী নীল
রঙের দিকে একটি
কবিতা।
২
কোনো
কিছুই যখন হয়
না। মানুষ
চিরতরে
মানুষকে দ্যাখে।
এই চিরায়ত
ভ্রমরের
খোঁজে কোনো এক
শরীর আটকে।
অথচ কিছুই
দেখেনি। অথচ
রাত্রি হয়েছে
এই অবধি। এখন
পর্যন্ত আমিই
এতসব কবিতা
হিজিবিজি।
কবিতা অযথাই
হিজি বিজ বিজ।
৩
খেলার
গপ্পো। অথচ
খেলাটা ভাঙা
হল। এই
নির্মিত শরীর
আজ পর্যন্ত
শুধু হয়েছে।
হয়েছেই খুব
কাছাকাছি। অথচ
কেউই শুনতে
চায়নি। এরকম
গল্প দিয়ে
একটা মাঝরাত
ধৌত হল। একটা
গল্প এরকম হল।
আস্তে ধীরে গল্প
কথা হল।
৪
একটা
গল্পকে ভরা
হচ্ছে কীসব
কবিতা দিয়ে।
একটা কবিতা
গল্প দিয়ে ভরে
গিয়ে। তবুও
সারাদিন যখন
সারাজীবন হল।
সারাজীবন যখন
সারাটা জীবন।
কবিতা তারপর
গল্প তারপর
কবিতা... অথচ
কবিতার ভিতর
দিয়ে পৃথিবী।
পৃথিবী দিয়ে এই
শরীর। হায়
শরীর, আমি ভেবে
দেখি, ভেবে ভেবে
দেখি, এই
তাৎপর্যে
খানিকটা গল্প
খানিকটা
কবিতাই। হে
কবিতা— হে কবিতা— শেষ
রাতের এইসব
অখিল কবিতা
রাখলাম।
কী
ভাবি থেকে কী
লিখি
বর্তমান
অবস্থা।
বর্তমান নিয়ে
ক্রমাগত ভাবি।
এই ভাবনা
সম্পূর্ণ
একান্ত আমাকে
ঘিরে। আর বাস্তবের
ধারণা আমার
কাছে আমার
মতো। আমাকে ঘিরে
একটা বাস্তব।
যে-বাস্তবকে
আমি নিজে কখনো
রোধ করতে পারি
না। আমার
বেঁচে থাকা
আমার কাছে একটা
অন্বেষণ।
এখানে
বেশিরভাগটাই
আমার
থাকা-না-থাকা
ঘিরে। আমি কল্পনা
করতে পারি না
সহজে।
প্রতিদিন
জীবনের পথ চলতে
হয়, এক তীব্র
মানসিক অবস্থাকে
অতিক্রম করে
বা সেটাকে বহন
করে চলতে হয়।
নিজেকে বলি— আর
কতদূর! এভাবে
ঋতু পরিবর্তন। আমি এমন
এক বর্তমানে
বাস করি
যেখানে কোনো
অবতরণ নেই। কোথাও
নিরাপদ আশ্রয়
নেই। দু-দণ্ড
বিশ্রাম নেই।
ক্রমাগত
মানসিক
অবস্থার এই
দীর্ণতা আমার
বেঁচে থাকার
সঙ্গে আমারই সংঘর্ষ
তৈরি করে।
অথচ। অথচ শীত
যায় বসন্ত আসে।
বসন্তও শেষ
হয়।
শেষপর্যন্ত
কিছুই হয় না।
অর্থহীন
অবস্থার ভিতর
মনে পড়ে
আশ্রয়ের কথা।
বিরামের কথা।
আমি বাক্যে
বিরাম খুঁজতে
থাকি। আর আমার
খোঁজা শেষ হয়
না অথচ আমি
বাক্যে, শব্দে, কবিতায়
আশ্রয় খুঁজি।
কবিতা আমাকে
আশ্রয় দেয় না।
আমি কবিতাকে
বাস্তব দিয়ে
গড়ে তুলি। এক
বিকল্প
বাস্তব।
কবি পরিচিতি
শতানীক রায়
জন্মেছেন
মালদা টাউনে, ১৯৯৩-য়ে। কবিতা
লিখেছেন খুব
অল্প। প্রথম
বাংলা কবিতা প্রকাশ ২০১৪ সালে
মালদার একটা
পত্রিকায়।
তারপর থেকে
কবিতা
অনিয়মিত লিখে
চলেছেন। কেন
এখনও লিখে চলেছেন
এই প্রশ্ন
নিজেকেও করেন
কবি এবং পাঠককেও
করতে চান। দুটো
কবিতার বই: ‘মাংস মায়া
আর আদ্যানদী’, ‘ময়ূর
কিংবা
নীলমণিলতা’। গদ্যের
বই: ‘আমি
চলছি ঘরও চলছে’। দুটো
সম্পাদিত বই: ‘সুন্দরী
ফাঁফারলো’, শার্ল
বোদল্যের, ভাষান্তর:
মলয়
রায়চৌধুরী
এবং ‘সাহিত্যে
নোবেলজয়ীদের
সাক্ষাৎকার’।
সম্পাদনা
করেন ‘জলটুঙ্গি’ পত্রিকা।
যৌথ সম্পাদনা
করেন ‘সে’ পত্রিকা
এবং শুধুমাত্র
অনুবাদের
পত্রিকা ‘অরণি’।
Copyright © 2024 Shataneek Roy
Published 30th June, 2024