অর্ঘ্যদীপ
রায়ের কবিতা
অর্ঘ্যদীপ
রায়-এর জন্ম ১৯৮৯।
মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যাণ্ড
টেলিকমিউনিকেশন
ইঞ্জিনিয়ারিং-এ
স্নাতক, আই-আই-টি
খড়গপুর থেকে স্নাতকোত্তর
এবং আই-আই-টি বম্বে’
থেকে পি-এইচ-ডি।
বর্তমানে ইউনিভার্সিটি
অফ ইলিনয়-আর্বানা
শ্যাম্পেন এ পোস্ট-ডক্টরাল
গবেষক হিসেবে কর্মরত।
প্রথম বই ‘একটি
জ্যোতির্ময় শিশু
আসে’ (২০১৭)।
খুনী (ধারাবাহিক)
(১)
জাগতিক
এক সকালের কথা।
যার বাম কাঁধে
মাথা রাখে ফুরিয়ে
আসা ক্লান্ত রাত। খুনী লুকিয়ে
থাকে পাশবালিশের
আড়ালে।
রজনীগন্ধার আলো
সুচারু করে তোলে
কর্কশ দেওয়াল।
খুনী দেখে নেয়
পাখির কাকলিতে
নিস্পৃহ মানুষগুলিকে।
দিনের আলোয় তাদের
রহস্যময় লাগছে।
মনে হচ্ছে এতদিনের
সংগৃহীত উদ্বর্তন
বাঁচিয়ে রেখেছিলো
মর্তুকাম দেউলগুলিকে
যার রাধাকৃষ্ণের
মূর্তির পায়ে কোনো
পাপবোধে বৈতরণীর
তীরে বাসা বাঁধা
এক শাঁকচুন্নি
ফুল রেখে যেতো
প্রতি অমাবস্যায়।
আর প্রত্যেক তৃতীয়ায়
পুজোর সিন্নি মুড়িতে
মেখে খেত সুবল
সাঁতরা। সুবল সাঁতরার
একটা জাল ছিল।
প্রতি রাতে স্বপ্ন
আসতো শ্রোণীপাখনার।
একটি নাছোড়বান্দা
সিলভার কার্প প্রত্যেক
বারই পালিয়ে যেতো।
শোনা যায় বহু যুগ
আগে পুকুরে তলিয়ে
যাওয়া কিছু বাসনের
অন্তরালে ছিল তার
হারেম।
সম্বিৎ
ফেরে খুনীর। এ
তার চিরপরিচিত
গ্রাম নয়। এ কলকাতা
শহর। যার গ্রিলগুলির
মাঝেও দূরত্ব বড়
কম। যে শহরের তলা
দিয়ে একটি ফল্গু
ম্যানহোল বয়ে যায়।
যার বিমানপোতে
আড়াই নম্বর গেট
থাকে। গেটের ভগ্নাংশ
মেনে নিতে পারে
যে শহর তাকে দেখতে
আফসানা বিবির মতো
নয়। নেই তার কপালজোড়া
ব্রণ। অথবা নেই
কলসী পায়ের ছোপ
যার ছায়াগুলি ধরে
ধরে একটি জন্মায়
কোনো ব্রততী।
নড়ে
ওঠে একটি মানুষ।
একটি মৃত চেতনা
পাশ ফেরে। খুনী
বুঝতে পারে সেই
মাহেন্দ্রক্ষণ
উপস্থিত যখন সূর্যাস্তের
রেখা মিলিয়ে যাবে
দূরের আলে, যেভাবে রক্ত
সরলরেখা তৈরী করে
শিরার বধ্যভূমিতে।
যেভাবে ফিনকি দিয়ে
পাপ ঠিকরে ঠিকরে
পড়ে জীবন্ত মৃতদেহগুলি
থেকে। খুনী তেষ্টা
অনুভব করে। মনে
পড়ে পাঠশালায় অঞ্জন
মাষ্টারের শেখানো
তালব্য বর্ণগুলি
উচ্চারণের সময়
কিভাবে গলা শুকিয়ে
আসতো। কিন্তু আজকে
তাকে একটা খুন
করতে হবে। আদেশ
আছে প্রভুর। প্রভু
রাখাল। প্রভু মাঠে
গরু চরাতে যাবার
আগে আদেশ দিয়ে
যান একটি মৃত্যুর।
তারপর আবার ফিরে
আসেন গোধূলিবেলায়।
সাথে থাকে একটি
শিশু। এক মৃত্যুর
দৃশ্যহীনতা তিনি
পূরণ করেন একটি
রোদে শোয়া নাভিতে
মাখানো সর্ষের
তেলের গন্ধে।
কিন্তু
আজ তো খুন। আজ খুন
দিবস। ধড় ও মস্তক
আলাদা করে দুটি
বিপ্রতীপ পৃথিবীতে
পাঠিয়ে দেবে সে
আজ। একটি প্রজাপতি
ঢুকে পড়লো ঘরে।
আহা একটি প্রজাপতি।
একটি নির্ভেজাল
প্রজাপতি। যার
ডানাগুলি দেখে
মেজো ঝিউড়ির মেয়ের
জন্মদিনে পাওয়া
ফ্রকটার কথা মনে
পড়তো। মনে পড়তো
ফাল্গুনের রাতে
পা মাড়িয়ে দেওয়া কেন্নোর
কথা।
সময়
বড়োই কম। ফিরতে
হবে তাকে। ওই বিপ্রতীপ
পৃথিবীর মায়া ছেড়ে
ফিরতে হবে তাকে।
এ সিলিং এ অপরিবর্তনীয়
মেঝে ছেড়ে তাকে
ফিরতেই হবে। এবং
সেই ফেরার জন্য
একটি খুন তার জরুরি,
এ কথা ভাবতে ভাবতে
সে খুন করে বসে
দ্বিতীয় মানুষটিকে।
বাতাসকণা খসে পড়ে
বেলোয়ারী বাস্তবে।
মাথাটা হাতে নিয়ে
মোরাম রাস্তায়
রক্ত ফেলতে ফেলতে
এগিয়ে চলে খুনী।
ওই বোধহয় প্রভুও
ফিরলেন একটি শিশুর
হাত ধরে। জলবাত্সা
খেয়ে মাথার গামছা
পাশে রেখে শিশুটিকে
কোলে তুলে নেয়
প্রভু। খুনী দেখতে
পায় কি আশ্চর্য
চেনা সেই মুখ।
ডান ভ্রুতে একটা
কাটা দাগ। আর পাশ
ফেরাতে লেগে থাকা
সেই মৃত চেতনা।
সেই শিশুর চোখে
সে তখনো একটি প্রজাপতির
প্রতিসরণ দেখতে
পায়। প্রভুর বাঁশি
চুঁইয়ে রাত নামে।
(২)
খুনীর
ঘুম ভাঙে একটি
স্বপ্নিল শীৎকারে।
পাঁউরুটিতে গত
রাতের বাসী রক্ত
মাখিয়ে সে প্রাতঃরাশ
সাজায়। দুর্ঘটনা
সাজিয়ে রাখে দেওয়ালে
সিলিঙে। প্রমাণ
বিছিয়ে রাখে নিপাতনে
সিদ্ধ খুনগুলির।
আজ সজনী আসবে।
সজনী আর তার পাংশুটে
বেড়ালটা। যার নাম
অ্যালিবাই। বিড়ালটাকে
দেখে খুনীর মনে
হয় যেন একটি নিখুঁত
আয়নায় অন্য অবয়বে
দেখছে নিজেকে সে।
সেই সুযোগসন্ধানী
চোখ। সেই শোণিতসন্ধানী
জিভ। এবং সেই শিহরণ
খুঁজে বেড়ানো একটা
ল্যাজ। বেড়ালটাকে
সোফায় বসিয়ে টিভি চালিয়ে
রান্নাঘরের ভেতর
থেকে তাকে দেখতে
থাকে সে। সজনী
ছিল ফ্রাইং প্যানে
নিমগ্ন। তার মাংসল
কোমর ছুঁয়ে যাচ্ছিলো
ইতিউতি ওঠা ধোঁয়া।
স্পর্শ করে যাচ্ছিলো
তার নাভিমূলে জন্ম
নেওয়া একটি আকস্মিক
ট্যাটু। খুনীর
মনে পড়ে গত গ্রীষ্মের
সেই রাত যখন সজনীর
শরীরে জন্ম নিয়েছিল
এই ট্যাটু। অখ্যাত
এক সমুদ্রসৈকতে
প্রকৃতির কপোল
ভিজিয়ে তারা যৌনতায়
মিশিয়ে দিচ্ছিলো
নিজেদের। একটি
ট্যাটুর গন্ধে
উপচীয়মান হয়ে উঠেছিল
ক্রন্দসী।
পুড়ছে
মাছটা। সজনী হঠাৎ
যেন বিহ্বল হয়ে
পড়েছে। খুনী সজনীর
স্থিতপ্রজ্ঞ পুকুরে
একটা ঢিল ছুঁড়লো।
যেভাবে ধ্যানরতা
হয় মেনকা আর কোনো
চঞ্চল বিশ্বামিত্র
তার শরীর থেকে
খুলে একটি বীর্যফুল
ছুঁড়ে দেয়। বেড়ালটাও
মাছের গন্ধে ছুটে
আসে। দেখতে পায়
চুম্বনরত খুনীকে
যার তর্জনী স্পর্শ
করে যাচ্ছিলো একটি
ত্রিশোর্ধ নারীর
পিঠ। ফ্রিজের ভেতর
যেভাবে সঞ্চিত
থাকে ঠান্ডা, সেভাবে
আটপৌরে রান্নাঘরের
চিমনি লালন করে
গোধূলির আগমনীগুলি।
আজানের শব্দে সচকিত
হয়ে দুটি মানুষ
নিজেদের নগ্নতা
আবিষ্কার করে।
খুনীর
হৃদয়ে বাঁশবন নেমে
আসে। মনে পড়ে পুঁটি।
যার ফেলে দেওয়া
রক্তমাখা ছেঁড়া
কাপড় নিয়ে দুটো
কুকুর মারামারি
করছিলো। বিড়িটা
আস্তে করে নিবিয়ে
খুনী দেখতে পেয়েছিলো
কিভাবে লজ্জাবনত
পুকুরগুলি আস্তে
আস্তে সন্ধ্যেকে
নিমন্ত্রণ করে
নিলো। অথবা যেন
একটি উটকো পুরুষের
উপস্থিতি যবনিকা
টেনে দিলো মাতৃত্ব
গহবরে। অবশ্য খুনী
তখনো খুনী হয়নি।
সবে সে ষোড়শ মহাজনপদ
শিখেছে। মাৎস্যন্যায়
তখনো তার আয়ত্ত
হয়নি।
(৩)
"আমার দুই আঁখি
ওই সুরে
যায় হারিয়ে
সজল ধারায়
ওই ছায়াময়
দূরে
দূরে
দূরে’
আপেলে
ছুরি গাঁথতে গাঁথতে
এই গানটা শুনছিল
খুনী। ব্রেকফাস্ট
টেবিলে রাখা ছিল
পাঁউরুটি ও বিবেক।
চিমনি দিয়ে বাতাসে
মিশে যাচ্ছিলো
ধোঁয়া। গতরাতের
লাশ লোপাট করছিলো
প্রামাণ্য পার্থিবতাগুলি।
জানলার ফাঁক দিয়ে
এক শালিক দেখতে
পেলো খুনী। ভাবতে
বসলো শৈশবের নিষ্পাপ
হিসেবগুলি। আজ
ছুটির দিন। অর্থাৎ,
একটি খুনের পর
কোনো এক অশ্বত্থ
গাছের ছায়ায় শুতে
শুতে একটি রক্তাক্ত
বৃক্কের স্বপ্নে
ধড়মড়িয়ে উঠে বসার
দিন আজ। খুনীর
একটা অভ্যেস আছে।
প্রত্যেক খুনের
পর বাড়ির ছাদে
একটা টবে একটা
গাছ লাগানো। একটি
স্পন্দনের শব্দ
যা নিখুঁত অথচ
সুপ্তিময়, তার
সবুজ আঙুলগুলিতে
প্রাণসঞ্চার করা।
অবশ্য আজকাল নিজে
হাতে খুন খুব একটা
করতে হয়না। কিন্তু
কাল ছিল সেরম একটা
দিন। উফ, কি খুন
ছিল একটা। যে খুনের
শিরায় শিরায় ক্ষীণ
ছিল হিসেব উল্টেপাল্টে
যাবার সম্ভাবনা।
বুঝতে সময় লাগে
কিছুটা। এ শরীর
এ হাড় এ মাংসপিন্ড
মৃত্যু চায় নাকি
তার কাল রাতেই
টিকিট কাটা আছে
রাতের ট্রেনে ডুয়ার্স
যাবার। অবশ্য কালকের
মাংসপিন্ডটা কেমন
যেন নির্লিপ্ত
ছিল। না ছিল তার
জীবনের পিছুটান,
না ছিল মৃত্যুময়তা। তৃতীয় অক্ষ
জুড়ে যেন এক সরলরৈখিক
নির্লিপ্ততার
গন্ধ পাচ্ছিলো
খুনী। যেন সে বুকভরা
শ্বাস নিয়ে বলে
গেছে এ ফুসফুসী
সমীরণে তোমার সাথে
দেখা হবে। খুনীর
প্রভুর মুখটা একবার
মনে পড়ে। প্রভু
বলেছিলেন, কখনো
নিজের উদ্দেশ্য
নিয়ে সংশয় প্রকাশ
করবেনা। যে সময়
তোমাকে একটি উদ্দেশ্য
রচনা করে দিয়ে
গেছে, সে সময় যতক্ষণ
না পেরোয় ততক্ষণ
উদ্দেশ্যে অটল
থেকো।
খুনীর
মনে পড়ে যায় তার
গ্রামের কাঠের
সাঁকোগুলির কথা।
যার ভঙ্গুরতায়
কোনো দোলাচলতার
জায়গা ছিলোনা।
সাঁকোটি পেরোবে
ভাবলে পেরোতেই
হতো। দেখা যেত
খালের মাছগুলি
কিভাবে খাবি খাচ্ছে
গণেশ সাঁতরার পেতে
যাওয়া জালে। সাঁকো
ও মৃত্যুর এই সহাবস্থান
বরাবরই তার অনুষঙ্গে
প্রাসঙ্গিক ছিল।
আজো, যখন মৃতের
রক্তের উপর দিয়ে
একটি আরশোলা হেঁটে
যায় তখন মনে হয়
এই বিবর্তন না
হওয়া প্রাণীটি
যেন তারই মতো।
মৃত্যুর জেব্রা
ক্রসিং পেরোতে
পেরোতে যারা মুহুর্মুহু
রং পাল্টে ফেলা
একটি আলোর দিকে
যাত্রা করে।
কৃতজ্ঞতা
: রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর
(৪)
"And
at once I knew I was not magnificent
Strayed
above the highway aisle
(Jagged
vacance, thick with ice)
I could see
for miles, miles, miles"
এভাবে সকাল হচ্ছে
কালপুরুষের গতিবিধি
ধরে। খুনী বুকে
বালিশ চেপে অপেক্ষা
করে কখন গিজারের
জল গরম হবে। পিটার
ইংল্যান্ড এর একটা
শার্ট ইস্ত্রি
করে বেরিয়ে পড়বে
সে মফঃস্বলের রাস্তায়।
আজ খুন নয়। তবে
আজ একটা লোককে
পিছু করতে হবে।
লালচে দাড়ির একটা
লোক। চোখে সুরমা।
ঠোঁটে পানের রেখা।
প্রাচীন
এক ধাবার ভেতর
বসে আছে লোকটা।
সামনে থালায় পড়ে
আছে দুটো লেগপিস।
আর একটা মোটা কাচের
গ্লাসে ঢালা পানীয়।
তর্জনী ও মধ্যমার
মাঝে অস্তমিত সিগারেট।
লোকটা অনেক পাপ
করেছে। তাই ওকে
শাস্তি দিতে হবে।
আদেশ প্রভুর।
প্রভু
পাপ পুণ্যের হিসেবে
রাখেন। কোন মন্দিরে
কে পাপক্ষয় করতে
যায় তা দেখে প্রভু
চিনতে পারেন গত
রাতে একটি মদ্যপ
চপ্পলের দাগ একটি
নারীর কপোলে। কোন
বিউটি পার্লারে
এক বিগতযৌবনা গতসঙ্গমের
চুল বিসর্জন দিয়ে
আসেন তা জুড়ে জুড়ে
একটি জিগোলোর মুখ
এঁকে ফেলেন প্রভু।
আজ
সারাদিন লোকটাকে
ফলো করতে হবে।
খুনী ছদ্মবেশে।
একটি ল্যাম্পপোস্টের
নিচে সাইকেলে হেলান
দিয়ে খুনী অপেক্ষা
করে। অনুধাবন করে
লোকটিকে। তার আচার
আচরণ ভঙ্গিমা দাঁত
খোটানোর কাঠিতে
খুঁজতে থাকে সত্ত্ব
রজঃ ও তমঃ।
বিকেল
হয়ে আসছে। লোকটা
বেরোলো। খুনীও
সতর্ক। লোকটার
পেছন পেছন এগিয়ে
গেলো। লোকটা থামছেই
না। একটা জঙ্গলে
ঢুকে গেলো লোকটা।
খুনী দেখলো অর্ধমৃত
এক পুকুরের ধারে
মেলা আছে হলুদ শাড়ি।
বাতাসে ভেসে আসছে অসংলগ্নতার
গন্ধ। খুনী দেখলো
সেই শাড়ির পেছনেই
একটা ঝুপড়ি। শাড়িটা
নিয়ে সেখানে ঢুকে
গেলো লোকটা। দূরে
একটা গাছের আড়াল
থেকে দূরবীনে দেখতে
পেলো সে কিছুক্ষনের
মধ্যে সেই শাড়িটা
গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে
এলো এক নারী। লোকটা
আর নেই।
খুনীর
মনে পড়লো তার গ্রামের
মনসামঙ্গল যাত্রাপালার
কথা। একটি পুরুষ
বেহুলা সেজেছিল।
তরণী ভাসিয়েছিল
সে সুরধুনীতে তার
মৃত স্বামীর জীবন
রক্ষার্থে। যাত্রার
শেষে খুনী দেখতে
পেয়েছিলো নেশাগ্রস্ত
মানুষগুলির মুখ,
ক্ষনিকের সত্যি
যাদের যৌনপীড়িত
পাকস্থলীতে খিদের
সঞ্চার করেছিল।
যে সত্য এতটাই
মিথ্যে অথবা যে
মিথ্যে এতটাই সত্যি,
তাদের কোনো একটি
মতবাদকে কেন্দ্র
করে পৃথিবীর উপপাদ্যগুলি
রচিত হলো। সত্যি
পাল্টে ফেলা তুখোড়
কুশীলবেরা মুহূর্তে
পাল্টে দিলো এতদিনের
তৈরী হওয়া প্রস্তরীভূত
মতবাদগুলি।
সাড়
ফিরলো খুনীর। একটি
নারীর পিছু পিছু
চলতে চলতে সে বুঝতে
পারছিলো না কোথায়
সে বাসরঘর লৌহপ্রকোষ্ঠ
আর কোন জাঁতির
আঘাতে আহত একটি
কালনাগিনীর অন্তরালে
বসবাস বাঁধবে সে
এই রাতে। এক পাপীকে
সে আজ শাস্তি দেবে
নাকি তার মৃতদেহ
বহন করার জন্য
একটা আধিভৌতিক
ক্যাব বুক করবে।
কৃতজ্ঞতা
: Bon Iver
(৫)
উইকেন্ড
শুরু হয় খুনীর।
বিগত কয়েকটি খুনের
এসাইনমেন্ট সাফল্যের
সাথে অতিক্রম করে
তার ছুটি কাটাতে
ইচ্ছে হয় এক সমুদ্রসৈকতে।
সাথে সজনী এবং
তার বেড়াল এলিবাই।
খেজুর
গাছের শাখায় বসে
জীবনের আঁচ পোহানো
কিছু মানুষ এসেছে
সেই সৈকতে। তাদের
দেখে গা চিড়বিড়
করলেও খুনীর কিছু
করার নেই। পরবর্তী
৪৮ ঘন্টার জন্য
সে আর খুনী নয়।
এক ট্যাটুময় নারী
ও একটি ঘোলাটে
চোখের বেড়াল নিয়ে
সে ঘুরে বেড়ায়
একটি সৈকতে। সন্ধ্যে
নামে। খুনী দেখে
কিভাবে মেছো নৌকাগুলি
ফিরে আসে এই জরদ্গব
সাগরের তীরে। কোনো
এক অজানা ভয়ে খুনীর
চেক চেক নীল শার্টের
হাতাটা চেপে ধরে
সজনী। খুনী বুঝতে
পারে মৃত মাছগুলির
হিসেবে রাখেনা
কোনো কল্প, মুখে
অরুচি হওয়া কুকুরও
তাদের স্পর্শ করেনা।
শুঁকে চলে যায়।
মনে হয় যেন কোনো
জামিন-অযোগ্য অপরাধে
শত মানুষের ভিড়েও
অস্পৃশ্যতার শাস্তি
একটি বিচ্ছিন্ন
দ্বীপের স্বপ্নাবেশ
তৈরী করে।
খুনীর
ভয় লাগে। এমন তো
নয় যে লোকটা মাছ
বিক্রি করছিলো
একটু আগে, সে আসলে
একটা টিকটিকি।
অথবা যে লোকটা
তার পাশেই আন্ডারপ্যান্ট
সামলাতে সামলাতে
সমুদ্রস্নান করছে,
সে অচিরেই নিজমূর্তি
ধারণ করে তাকে
শ্বাসরুদ্ধ করে
মেরে ফেলবে এই
সৈকতে। এই ঝাউবনে
পড়ে থাকবে তার
মৃতদেহ। দূরে এলিবাই
কাঁদবে। সজনী একটা
নেকুপুষু রুমালে
চোখের জল মুছতে
মুছতে সান্ত্বনা
ও দ্বিতীয় বয়ফ্রেন্ড
খুঁজতে চাইবে।
আচ্ছা ,সজনীকে
কি সে ভালোবাসে
? সম্ভব কি ভালোবাসা
একটা কলগার্লের
সাথে? যার নগ্নতা
উন্মোচিত হয়েছিল
কফি ও গাঁজার গন্ধে
উদ্বেল একটি ফ্ল্যাটবাড়িতে।
তারপর সে নগ্নতা
পরিণতি পেয়েছে
শীতের রাতে আধঘুমে
শরীর থেকে পলায়মান
চাদরের পুনর্বাসনে।
খুনী জানেনা এভাবে
ভালোবাসা সম্ভব
কিনা। এমন ভালোবাসা
সে কখনো দেখেনি
তার ছোটবেলায়।
যেখানে ভালোবাসা
উদিত হতো মায়ের
চিরুনির ডগায় লেগে
থাকা সিঁদুরের
সিঁথিভ্রমণে আর
অস্ত যেত দুধ রুটিতে।
এমন
ভালোবাসা সে চায়নি
যে ভালোবাসা তার
মৃতদেহের চারদিকে
আঁকা চকের দাগের
ওপারে একটা সিগারেট
হাতে নিয়ে ক্ষনিকের
ছিঁচক্রন্দনে
আগামীকালের আরেকটি
অভিসারের গুগুল
ম্যাপ লোকেশান
এর মেসেজ খুলে
দেখবে। বরং বোধহয়
এমনটি চেয়েছিলো
যে নাকে তুলো গোঁজা
এক মৃতদেহ তার
শিয়রে এক সদাহাস্যমান
ফোটোফ্রেম নিয়ে
পায়ে একটি আকুল
নারীর ঘন ঘন মূর্চ্ছা
যাওয়া দেখে নিশ্চেষ্ট
হবে।
ঢেউ
পা স্পর্শ করে
খুনীর। সম্বিৎ
ফেরে। দেখে সজনীর
চোখে জল। সে তাকায়
সজনীর দিকে। খুনী
ভালোবাসা খুঁজে
পায় সে চোখে। অথবা
হয়তো বুঝতে পারে
নারীর চোখের সত্যি
উদ্বায়ী হতে ভালোবাসে।
আজ যা ঘর কাল তাতে
প্রজাপতি আসুক
এই কথা ভাবতে ভাবতে
খুনী দেখে তাদের
আগমনীধ্বনিতে
জাগতিক কাঁকড়াগুলিও
শিহরিত হয়ে উঠছে।
এই অন্দরমহলময়
সমুদ্রতীরে তাদের
জন্যেও হয়তো কোনো
ঘরের কথা লেখা
আছে ,কোনো কুলুঙ্গিতে
বাসী হওয়া জবা
ফুলের কথা লেখা
আছে অথবা রোদে
শুকোতে দেওয়া গামছাতে
একটি দ্বৈত গন্ধ
অমলিন হয়ে আছে।
"Aiming
and it sunk and we were drunk and we had fleshed it out
Nose up in
the globes, you never know if you are passing out
No it
wasn't maiden-up, the falling or the faded luck
Hung up in
the ivory, both were climbing for a finer cause
Love can
hardly leave the room
With your
heart"
কৃতজ্ঞতা : Bon Iver
(৬)
সব
শেষ। একটি বেখেয়ালী
ওয়ান বি এইচ এর
সাথে সমস্ত হিসেব
নিকেশ চুকিয়ে বেরিয়ে
পড়ছে খুনী। পড়ে
থাকলো তার কাঠকয়লা
স্মৃতি দেয়ালজুড়ে।
পড়ে থাকলো তার
বেলোয়ারী জানলার
ওপারে ঘুমন্ত বেড়ালশিশু।
অথবা বাসী হয়ে
আসা আয়নার বুকে
সজনীর শেষ বিদায়
বার্তা লেখা ছিল
লিপস্টিকে। এ জন্মের
মতো ফুরিয়ে আসছে
উপমাময় বিকেলগুলি।
যখন মাটি ফেলে
ভরিয়ে ফেলা লেকের
পেছনে সূর্যাস্ত
দেখতে দেখতে তার
মনে পড়তো ছোটবেলার
স্কুলমাঠের কথা
যেখানে আঁধারলিপ্ত
একটি ফুটবল অদৃশ্য
হওয়া অব্দি খেলা
চলতো। অথবা পাশের
গাঁদাফুলের ক্ষেত
থেকে অতীতের দিকে
তাকাতো ভোলা মাইতি।
যৌবনে যে লোকটা
মাঠকাঁপানো স্ট্রাইকার
ছিল, সে সাইকেল
চালিয়ে যেত দশ
কিলোমিটার দূরবর্তী
একটি ফুলের বাজারে
ফুল বিক্রি করতে।
লুঙ্গি পরে দু-দম
প্যাডেল করে কিভাবে
সাইকেলের সিটে
স্থাপন করতে হয়
নিতম্ব, তা বরাবরই
খুনীর কাছে বিস্ময়ের
ছিল।
বেলা
পড়ছে। বাসটা শহর
ছেড়ে ক্রমশঃ এগিয়ে
যাচ্ছে। আর দেখা
যাচ্ছেনা সেই ফ্লাইওভারগুলো
যার উপকণ্ঠে এসে
মহাভিনিষ্ক্রমণ
ভাবতে ভাবতে অচিরেই
ভুল ভাঙে। বোঝা
যায় শহরেরও একটা
নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণ
আছে। খুদে হয়ে
আসা বাইকগুলো আবার
ভাস্বর হয়ে ওঠে।
নিজেকে চক্ষুষ্মান
মনে হয়। এখন শুধুই
গাছপালা, সবুজ
জমি, এক চিলতে পুকুর।
তার মাঝে কপালের
তিলের মতো জেগে
থাকা কয়েকটি উদ্ভ্রান্ত
আকস্মিক পেট্রল
পাম্প। এ রাস্তা
চেনা লাগে খুনীর।
মনে হয় যে শিকড়
স্থাপন করে রাখা
ছিল একটি নিবিড়
পাতকুয়ার পাশে
ঘুমপিয়াসী একটি
গাছের, সে গাছ অক্সিজেনহীনতায়
কিভাবে সালোকসংশ্লেষ
করতে পারে ?
ফিরে
আসাটা খুব সহজ
ছিলোনা। প্রভুর
সম্মোহন। আততায়ীর
শিভ্যালরি। মৃতের
নিষ্প্রাণ শরীরের
রাইগর মর্টিসের
চিত্রনাট্যগুলি।
সজনী। এলিবাইয়ের
জন্য রাখা দুধের
বাটি।
কিন্তু
ফিরতেই হতো। এক
সকালে হঠাৎ করে।
সমস্ত কিছু পাল্টে
ফেলে। যেভাবে এক
একটি মৃত্যু পাল্টে
দিতো মৃতের পরিধিতে
বাস করা মানুষগুলিকে।
সেভাবে সমস্ত কিছু
ছেড়ে এ শহর ছেড়ে
ফেরা নিজের শিকড়ের
খোঁজে। প্রভুর
কাছে গিয়েছিলো
খুনী। প্রভু বললেন,
যা পাগল। যেদিন
তোর আমার দর্শন
মিলে যাবে সেদিন
হয়তো আবার দেখা
হবে। খুন কোনো
নোংরা কাজ নয়।
একটি মাধ্যম। ঈশ্বরে
পৌঁছানোর। একটি
মাধ্যম। পারঙ্গমতার
তুরীয় স্তরে পৌঁছনোর।
খুন কোনো যাপন
নয়। একটি খুন খুনীকে
ক্লিন্ন করেনা।
গৌরবান্বিত করে।
যে খুন সামাজিক
অপরাধের নিগড়ে
জর্জরিত হয়ে থাকে,
তার ফিরে যাওয়াই
ভালো।
প্রভু
আটকাননি। সজনীও।
একটি ক্ষণজীবী
কণা আশা দেখেছিলো
তেজস্ক্রিয় হবার।
যার অর্ধায়ুতে
তাদের ভালোবাসার
কথা লেখা থাকতে
পারতো। সজনী হয়তো
ভালোবেসে ছিল তাকে।
যেদিন গভীর রাতে
লোডশেডিং হয়ে গেছিলো
আর সজনীর জ্বর
এসেছিলো ধুম, কিন্তু
ওষুধ কিনতে যেতে
দিচ্ছিলো না সে
খুনীকে, সেদিন
সজনী ভালোবেসে
ছিল তাকে। যেদিন
সকালে সজনীর সাথে
একটা নাম্বারপ্লেটহীন
গাড়িতে চড়ে বাইপাসে
যেতে যেতে হঠাৎ
করে ঢুকে পড়া একটা
ট্রাক দেখে ব্রেক
কষেছিল খুনী, সেদিন
তাকে ভালোবেসেছিল
সজনী। গাড়িটা রাস্তার
ধারে দাঁড় করিয়ে
তারা অনেকক্ষণ
চুমু খেয়েছিলো।
শেষ
ভোরে সজনীকে দেখতে
পায়নি খুনী। যখন
তার ঘুম ভেঙেছিল,
তখন পাশে সজনী
বা শিয়রে এলিবাই
কেউই ছিলোনা। আড়মোড়া
ভাঙতে ভাঙতে দরজা
খুলে শেষবারের
মতো নাগরিক একটি
নিউজ পেপার তুলে
নিতে নিতে খুনী
আবিষ্কার করে দরজার
হাতলে গতরাত্রের
অন্তর্বাস ঝুলিয়ে
রেখে গেছে সজনী।
যৌনতা দিয়ে ভালোবাসাকে
মুছে দিয়ে গেছে
সজনী।
"Joy,
it's all founded
Pincher
with the skin inside
You pinned
me with your black sphere eyes
You know
that all the rope's untied
I was only
for to die beside"
কৃতজ্ঞতা
: Bon Iver
(৭)
এতদিনের
ক্লান্তি মাথা
রাখছে মাদুর বালিশে।
এ যেন সহস্র এক
আরব্য রজনী শেষ
করার ক্লান্তি।
এ যেন একটি অন্তহীন
নদীর পাড়ে বসে
কোনো গতজন্মের
ঠিকানাহীন প্রেমিকার
জন্য অক্ষৌহিণী
কাপলেট রচনার ক্লান্তি।
খুনী এক দৃষ্টিতে
তাকিয়ে থাকে দালান
পেরিয়ে জেগে থাকা
পানাপুকুরটির
দিকে। তির্যক দৃষ্টিতে
দেখে পায় ঘুনসি
পরা নগ্ন শিশু
হামাগুড়ি দিতে
দিতে কিভাবে এগিয়ে
যায় পলায়মান মুরগীছানার
দিকে। খুন নেই
আর তার জীবনে।
অবশ্য
প্রতিটি রাত এমন
বাট সাবানে ঘষা
কাপড়ের মতো শুদ্ধসত্ত্ব
হয়না। ঘুম ভেঙে
যায়। মনে পড়ে যায়
সজনীর কথা। শিয়রে
রাখা মোবাইল হাতড়ে
কিছু মেসেজ টাইপ
করেও মুছে ফেলে
খুনী। ফিরতেই হবে
তাকে। কিন্তু কেন
সে ফিরবে ? কোনো
ঠিক এর জন্য? কোনটা
ঠিক ? একটি সহজাত
সাবলীল সত্যিকে
ফেলে যাওয়াটা ঠিক
? নাকি যা ঘটমান
বর্তমান ছিল, যার
ইতস্ততঃ ভাবনাগুলির
মধ্যে একটি শিকড়ের
অসম্মতি ছিল ? এসব
ভাবতে ভাবতে খুনী
দেখতে পায় দেওয়ালে
টাঙিয়ে রাখা তার
মৃত বাবার ছবি।
গলায় বাসী হয়ে
যাওয়া মালা। একটি
মৃত্যু অনেক পুরোনো
হতে হতে ক্রমশঃ
বেড়ে যায় তার মালা
পরিবর্তনের পর্যায়কাল।
"Ah,
but who is it climbs to your picture
With a
garland of freshly cut tears?
Take this
waltz, take this waltz
Take this
waltz it's been dying for years"
কোনো
কোনো রাতে ভিড়
করে খুনের নেশা।
রাতে ঘুমের ওষুধ
খেয়ে ঘুমোতে যায়
খুনীর অসুস্থ মা।
খুনী উঠে বসে দখিনায়।
হাত নিশপিশ করে।
মনে হয় আহা কতদিন
খুন করেনি। কতদিন
ফিনকি দিয়ে বেরোনো
রক্তস্রোতে ভিজতে
ভিজতে একটি ছুঁচোকে
ম্যানহোলে ঢুকে
যেতে দেখেনি। রান্নাঘরের
দিকে এগিয়ে যায়
খুনী। আঁশবঁটিটা
নিয়ে বেরিয়ে পড়ে
পাড়ার রাস্তায়।
ঘুমোচ্ছে গ্রাম।
একটা সাইকেল দোকানের
বাইরে ঝুলছে একটা
পুরোনো টায়ার।
সন্তর্পনে পেরিয়ে
আসে দোকানটা খুনী।
দেখে একটু দূরেই
একটা পঞ্চায়েত
অফিসের বাইরে রাখা
অনেকদিনের বেঞ্চিতে
শুয়ে আছে একটা
বেড়াল। খুনীর মাথায়
খুন চেপে যায়।
ধীরে ধীরে সে এগিয়ে
যায় বিড়ালটার দিকে।
সে জানে বঁটির
আঁশের গন্ধে জেগে
উঠবে না বিড়ালটা
আর। একটা প্রবল
বঁটির কোপে তার
পঞ্চত্বপ্রাপ্তি
ঘটবে। খুনী ফিরে
আসে নিজের বিছানায়।
ঘাম দিয়ে নেশা
নামে শরীর থেকে।
রাতফুলের গন্ধ
ভেসে আসে। মনে
হয় সজনীর বুকে
মাথা রাখছে সে।
যে ঠিকানায় প্রত্যেকটি
খুনের পর বিলীন
হয়ে যেত সে, সেই
ঠিকানায় আবার বিলীন
হয়ে যাচ্ছে সে।
সকাল
হয়। খুনীর ঘুম
ভাঙতে দেরি হয়েছে।
দেখে এক রমণী বসে
আছে ঘর জুড়ে। তার
হাতে একটা বড় বস্তা
মুড়ির। একটা চালার
উপর মুড়ি চালতে
চালতে সে খুনীর
মার সাথে চোখ হাত
পা নেড়ে কথা বলছে।
খুনীর মায়ের মুখে
হাসি। যেন ঘরের
লক্ষ্মী স্বয়ং
এসে পুরোনো হয়ে
যাওয়া টিনের কৌটোগুলো
ভরে দিচ্ছে মুড়িতে।
সাথে কয়েকটা গুড়বাতাসা।
খুনী আয়নায় দেখে
নেয় মেয়েটির প্রতিবিম্ব।
আটপৌরে শাড়ি, রৌদ্রক্লিন্ন
মুখ। মনে হয় এ মুখটি
না দিতে পারে সুখ
, না দিতে দুঃখ।
এ মুখটি সাথে থাকে।
সুখে বা দুঃখে
নয়, একটি মুখের
সাহচর্যে অভ্যস্ত
হতে থাকার নামই
বোধহয় ভালোবাসা।
কৃতজ্ঞতা
: Leonard
Cohen
Copyright ©
2020 Arghyadeep Roy Published 1st Sep, 2020.