কবিতা
অর্ঘ্যদীপ
রায়
===
অর্ঘ্যদীপ
রায় খুঁজছেন বিজ্ঞান
ও সাহিত্যের একটি
অন্তর্নিহিত
যোগসূত্রের উৎসস্থলের
সন্ধান প্রক্রিয়াটি।
ওঁর আত্মানুসন্ধানের
চারণভূমি গড়ে
উঠেছে একটি
ট্রায়াডকে
অবলম্বন করে - হলো
কবিতা,
সঙ্গীত ও ভ্রমণ।
অর্ঘ্যদীপের
কবিতা
বিজ্ঞানভাবনার
ওপর ভিত নির্মাণ
করে, তারপর
কখনো নেমে
যায় এক প্রাকৃতিক
জিজীবিষায়।
কবিতায়
সদ্যজীবী অর্ঘ্যদীপের
লেখা
ইতিমধ্যে
প্রকাশিত হয়েছে
‘নতুন কবিতা’, ‘র’,
‘অ্যাশট্রে’
প্রভৃতি
পত্রিকায়। জন্ম
১৯৮৯ সালে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে ইলেকট্রনিক্স
অ্যাণ্ড টেলিকমিউনিকেশন
ইঞ্জিনিয়ারিং
এ স্নাতক এবং আই.আই.টি
খড়গপুর থেকে স্নাতকোত্তর। বর্তমানে
আই. আই. টি বম্বেতে
ইলেট্রিক্যাল
ইঞ্জিনিয়ারিং
এ গবেষণারত। |
|
(১)
একটি
বিজোড় সংখ্যা পেরিয়ে
আমি এগিয়ে চলি।
একটি মৌলিক সংখ্যাকে
দেখতে পাই। জানি
এ সংখ্যার উত্পাদক
হতে পারবোনা। বিজোড়
সংখ্যার স্মৃতি
আমায় বীতকাম হতে
বাধ্য করে। কোনো
ভাগশেষ সাজানো
থাকে আমার বইয়ের
তাকের হামাগুড়িতে।
পৃথিবীতে মৌলিক
সংখ্যা বড়ই কম।
অথচ দুঃখের বিষয়
দুটি মৌলিক সংখ্যা
গ.সা.গু তে গিয়ে
হারিয়ে গেল কোনো
সূর্যোদয়ের ওপারে
ঘটে যাওয়া কোনো
পৌনপৌনিক অমূলদ
মৃত্যুতে। যৌগিক
সংখ্যারা উত্পাদক
খুঁজে নিল। মৌলিক
সংখ্যারা সূর্যাস্তের
আলোয় অজস্র পেলিক্যান
পাখির ভিড়ে বিগতযৌবনা
নারীর মত কন্ডোমের
প্রয়োজনহীনতায়
বিশ্বাস রাখল।
(২)
সংখ্যা
হয়ে জন্মগ্রহণ
করেছি। যখন ছোট
ছিলাম যোগ বিয়োগে
সন্তুষ্ট থাকত
পূর্বপুরুষেরা।
কখনো অবাক হতাম
কিভাবে এককের ঘরের
ঋণ উড়ে এসে জুড়ে
বসে দশকের কাঁধে।
বিয়োগ আমার কখনই
ভালো লাগেনি। তেঁতুলতলায়
প্রতি রাতে এক
শাঁখচুন্নি আসতো।
সে আমায় লিঙ্গ
দেখাত আর বলত আয়
আমায় চুদবি আয়।
আমি ফ্যাক্টরিয়াল
শিখি এভাবে। অবশ্য
এই ফ্যাক্টরিয়াল
খেলা বেশিদিন চলেনি।
২১ দিনের মাথায়
দেখতে পেলাম ইটভাটায়
কাজ করতে আসা নতুন
শ্রমিক শাঁখচুন্নির
শরীরের তরলে পরিপাটি
চুল আঁচড়ে নিচ্ছে
কোনো বহুমাত্রিক
আয়নায়।
তারপর
একদিন দশমিক শিখলাম।
বেণী বাঁধা এক
কিশোরী। যে আমায়
শাঁখচুন্নির স্মৃতি
ভুলিয়ে দিল। যে
দশমিকের পাশে বসেছিল
জ্যামিতি বাক্স
আনেনি বলে। যার
কাছে শিখলাম দশমিকের
এদিক থেকে ওদিকে
সংখ্যার ঋণ কিভাবে
প্রসারিত হয়। অবশ্য
সিলিং আর ফ্লোরে
তার অস্তিত্ব ছিলনা।
আমরা শুধু ভাবতাম, কবে
আমাদের গুণ করে
যাবে কোনো পবিত্র
একশ আর মাঝের দশমিকটা
উবে যাবে। অঙ্কে
যা দশমিক, সাহিত্যে
তা ড্যাশ। বহুব্রীহি
সমাসের স্বপ্ন
আসতো। স্বপ্ন আসতো
লগারিদম এর। কোনো
এক্সপোনেনশিয়াল
প্লটের পিঠ ধরে
আমরা এক্স ও ওয়াই
অক্ষ থেকে অনেক
দূরে এসেছিলাম।
রাস্তায় দেখতে
দেখতে এলাম উপমা, অলংকার
, ছন্দ
ও লয় স্টেশনগুলি
। অলংকার স্টেশনে
অনেকক্ষণ দাড়িয়েছিল
ট্রেন। একটা চা
দোকানে আমরা মড
চা আর কস বিস্কুট
খেলাম। একটি ভিখিরি
ছিল যে মাধুকরী
চাইছিল। তাকে কিছু
আইগেনভ্যালু দিয়েছিলাম।
(৩)
সংখ্যারা
ঘুমিয়ে পড়ে। এমন
ছবি কোনো গুহাচিত্রেই
নেই। সংখ্যাদের
অভিমান হয়। এক
একটা সংখ্যা আরেক
সংখ্যার মাথায়
বিলি কেটে দেয়।
বলে, ক্যালকুলাস
ভোর আসুক, আসুক ট্রাপিজিয়াম
অববাহিকায় ঘুমপাড়ানি
পলিমাটি। এক সংখ্যা
আরেক সংখ্যার শরীরে
মিশে যায় এমন কোনো
নদীমাতৃক প্রহরে
ফুটে ওঠে কমলা
সূর্য। তাকে অতিভূজে
রাখি। বড়ই অর্থগোনাল
এই সম্পর্করা।
কখনো একে অপরের
গ্র্যাডিয়েন্টে
চোখ রাখে। পাপ
ছেয়ে যায় সংখ্যাগুলিতে।
মাদুর নিয়ে বাঁশবাগানের
ধারে শুতে যায়
একটি সংখ্যা। আরেক
সংখ্যা হ্যারিকেন
নিয়ে বসে থাকে।
বাইনোমিয়াল নুলিয়াদের
জালে ভোররাতে পোয়াতি
মাছ ওঠে।
(৪)
সংখ্যাতত্ত্বের
কথায় আসা যাক।
আচ্ছা ,ল.সা.গু কি ?
লঘিষ্ঠ
সাধারণ
গুণিতক।
অর্থাৎ
লঘিষ্ঠ সেই সংখ্যা
যা সমস্ত
সংখ্যাগুলি
দ্বারা
বিভাজ্য।
সন্তান পিতা ও
মাতা দ্বারা
বিভাজ্য।
সন্তান=X * বাবা , সন্তান =Y
* মা। অর্থাৎ
বাবা ও মা
পরস্পর মৌলিক
হলে বাবা =Y ,মা =X । ধরে নেওয়া
যাক এই X আর Y এর সংসার।
বুলিয়ান সেই
সংসারে এসে জুটল
একটি সন্তান। জন্ম
নিল একটি গুণিতক।
আহা একটি গুণিতক।
আহা শিশু একটি
গুণিতক। গুণিতক
খুব ছোটবেলায় পড়ে
গিয়ে মাথা ফাটালো।
ডাক পড়ল আসন্ন
মানের। পাড়ার ডাক্তার
আসন্ন মান। পাড়ার
মোড়ে তার ঘনবস্তু
চেম্বার। প্রশ্ন
হলো, গুণনীয়ক কোন
চুলোয়? শঙ্কু চেয়ারে
আর সমতল মেঝেতে
তাদের ছড়িয়ে থাকত
পাখির গু। বারান্দাময়
সমান্তরাল সরলরেখা।
দুই সরলরেখার মাঝে
অনেক মৃত আরশোলা।
দুটি অস্থির সাম্যে
ঝুলতে থাকা ইজিচেয়ারে
দুটো মৃতদেহ। তাদের
ছায়ায় একটি নবভুজ
তৈরী হচ্ছিল। এভাবে
টুপ করে নিভে গেল
স্বতঃসিদ্ধের
ক্যামেরারা।
(৫)
জেড
অক্ষের উপর
বসে ছেলেটি
খাঁজ দেখে
কোনো দীর্ঘাঙ্গী
বেহালা-বাদিকার।
বেহালার সুর
বয়ে যায় শরীরে
ও
অন্তরীক্ষে।
উপপাদ্যের এ
পৃথিবী।
ক্ষেত্রফলের
এ শীলনোড়া।
এক্স অক্ষে
বাজার বসেছে
সকাল সকাল।
সাইকেলের
পেছনের
কেরিয়ারে
বাঁধা থাকে
মাগুর মাছের
নন -লিনিয়ার
হাঁড়ি। প্রেম
তিনটি
ভেরিয়েবলের
ফাংসন হয়ে
ওঠে। প্রেম
(মানুষ ,মানুষ ,সময় )। এমনি
কোনো এক অবতল
প্রেম এন
টেন্ডস টু ইনফিনিটিতে
বিয়ে হয়ে ওঠে।
কোনো
উপবৃত্তের নাভি
হয়ে ওঠে
শুভদৃষ্টি।
বাতাসে খই ওড়ে
ব্রাউনীয়
গোধূলিতে।
একটি palindromic নারী
খুঁজি আমি।
একটি নারী
যাকে উল্টো
দিক থেকে
পড়লেও তাকেই
দেখা যায়।
একটি নারী যার
শরীরের মাঝে
একটা আয়না
ধরলে
সিমেট্রিক
হয়ে ওঠে প্রকৃতি।
একটি নারী
যাকে আমি বলি
কোনো ক্ষয়জাত পাহাড়ের
পাদদেশে
দাঁড়িয়ে
থাকতে । তারপর
সমবেগ নিয়ে
দূর থেকে এক
নিউটনীয় গাড়ি
চালিয়ে আসি তার
দিকে। পেরিয়ে
যাই। আবার
ফিরে আসি। মুখ
থাকে গাড়ির
গতির
বিপরীতে।
দেখতে পাই
অপরিবর্তনীয়
সেই
নারীটিকে।
গাড়ির
স্মৃতিতে তার
চুল বড় হয়।
চোখে বাড়ে
ইহজন্মের
পাওয়ার। এমন
একটি নারীর
কাছে আমি চলে
আসি। কোনো
বাস্তব
সংখ্যার
বাক্সে আমি
থাকতে
পারিনা।
আমাকে পূর্ণ
সংখ্যারা
আকর্ষণ করে।
তার মধ্যে
ভাস্মর হয়ে
থাকে একটি
প্যালিনড্রম
নারী। রোগা
থেকে রোগাতর
হয় তার বেধ।
কেউ যেন তার
গালে জলরং
বুলিয়ে যায়।
কেউ যেন
ধ্রুবক হয়ে
আসা দেয়ালে
চারকোল দিয়ে
লিখে রাখে তার
শ্লোকগুলি ।
কিংবদন্তি
হয়ে আসা নাকতিলে
আমি ডেফিনিশন
খুঁজে পাই।
বন্ধ হয়ে আসা অব্যবহৃত
কানের দুলের
ফুটোয়
গতজন্মের
থ্রি টু দ্য
পাওয়ার এক্স
দেখতে পাই।
একটি প্যালিনড্রম
নারীর সাথে
কোয়ান্টাম
কোনো পাঁচিল
টপকে আমি
পালিয়ে যাই ।
ভরবেগ ও
অবস্থানের এই
টানাপোড়েনের
মাঝে ত্বরণ
জন্ম নেয়
কপালে।
===
Copyright
© 2016 Arghyadeep Roy Published 31st Aug, 2016.