খায়রুজ্জামান সাদেকের কবিতা 

 

খায়রুজ্জামান সাদেক বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ও সমান্তরাল কবিতার এক স্বতন্ত্র, স্বাধীন, নব্য কণ্ঠস্বর। বছর কয়েক পূর্বে কৌরব ৫২তে সাদেকের বেশ কিছু কবিতা প্রকাশিত হয়। এবারের শীর্ষকহীন কবিতাকে ‘ডিসেম্বর ২০১৯’ বলা হলো।  

image003

 

ডিসেম্বর, ২০১৯

              

 

যে ঘর প্রতিশ্রুতি দ্যায়

মার্জিন নিংড়ে তার কিয়দংশ

এই কাগজে পড়ে আছে

পায়ের চিহ্ন দরজার পাশে

লেটার বক্স জুড়ে হিসেব নিকেশ

বেলা ভাঙতেই

গোছানো বা অগোছালো

ভেজা কাপড়ের গন্ধ নিতে নিতেই

শুকিয়ে যায় পথ-রেখা

ধুলো ঝাপটানো তিমির রাত

এক সারি গাছের পাশে

 

অবস্থান থেকে অবস্থানে

ঘুমায় অনুচ্চার শব্দ

টেপ খুলতে খুলতেই

শর্করা ভাঙতে থাকে

মৃত বা খুশী খুশী শব্দ-পোতের উপর দিয়ে

ঝুল জমা পড়ে থাকে

অবলোকনের ওইসব দূরে নড়তে থাকে

কত হাত

তবু দেখার থাকেনা কিছু

তবু বেরিয়ে যাওয়া দিকগুলো থাকে

শিকড়ে আংরাখায়

 

সিম্ফনির এই দিক ব্যবহারিক অদৃশ্য

আর আকর্ষণ

আকর্ষণের আরেকটি বিষয়

স্পষ্টতই, কিছু অবহেলা থাকে জুটির যোগফলে

তোমার ক্যানভাস কি ভুল সম্পর্কের মন্ত্র দিতে পারে

এই পাইন বনে

সৃজন ধরে গণনা ঝরে পড়ছে।

 

এই মরসুমে শরমে তারা একে অপরকে দেখেনি

আর যে তাদের শত স্পর্শ রয়েছে

 

দিগন্তে মিলায় কয়েকটি সংযোগ

আমার হাত সরানোর সাথে আমি তাই সম্বোধন করি

 

উত্তেজনা প্রকাশ করি

আর আবিষ্কার করি এখানে বসে থাকার কারণ

 

যে সত্য আলাদা আর যে ডুবে যায়

যে প্রতিযোগী অদৃশ্য –  লড়াই থামে না

সমস্ত লাইন পক্ষপাতের

 

কোণগুলির অই সুন্দর

 

পড়ে আছে ম্লান ছায়ার পাশে

 

চেটে খেয়ে নৈশভোজ গড়াবে এই অংশে গ্রহটির। ছিটিয়ে থাকা দ্বিধা আর ধূসর মাটির। আর যা ভাবনা ছাড়িয়ে যায় এমন ত্রিভুজ প্রেম নিয়ে বসেছি। বহুভাগে উপাদেয়- জিততে ব্যর্থ হলেও- যেখানে সত্য বরখাস্ত আর সব রঙ সমাসীন। বোকা হাত কি মাংসের পরিণতি দেখে! উনুন চড়ানো হাত ধরা, যেই যথেষ্ট গ্রহণ করতে পারি যেমন তার সাদা কালো ভ্রম ভেতরে জমছে। এই গ্রহণে রেখেছি পরিবর্তনে রেখেছি তবু-

তোমার মুখ দেখেই দেখো আর কত...

 

অবহিত করার কোনও ভিত্তি নেই, এখন আমি আপনার সহায়তা চাইব। আসন্ন বছরে যা কাব্যিক হইবে আর তাদের মুখোমুখি ঢং ফলাফল সংজ্ঞায়িত হইবে। সত্য তাড়িয়ে দেয়া ক্রোধ নিষ্ঠুরতা মিথ্যাচার সাধারণ করে দেয়া। এখন এমন তাঁর সবই থাকতে পারে আমার শ্রুতিমধুর কণ্ঠায় আর যা আমি নতুন ঢঙে নির্মাণ করে ফেলেছি, তুফান করে ফেলেছি, নির্মম ছেড়ে দিয়েছি হত্যাযজ্ঞে। ওহ্ ভরে তুলেছি এমন যা আপনাকে নিয়ে যেতে পারে কোনও আদর্শ কেন্দ্রে, পানশালায়, পাঠশালায়, নন্দন-কুঞ্জে আর তারাই বলে দিতে পারে জিতে যাওয়া, ব্যর্থ হওয়ার তামাম। এবার আমি আওয়াজে আওয়াজে ভরে তুলবো চিৎকার করবো- কারো মুখ না দেখেই- যথেচ্ছা তাই, শত ঝাঁকুনি লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছবে। কখনও কখনও পার্থক্য চিন্তা করে ক্ষমতা ছাপিয়ে এমন আমি দেখিয়ে দেবো থিয়েটারে, তোমায়। তাদের সকল পুনরুত্থিত করে সকল তৃষ্ণা মিটিয়ে দেবো এক কার্বন-শূন্য প্লেটে...

 

এই পৃথিবী এবং ধূসর পৃথিবী ছড়িয়ে দিন- কিছু হয়

আমাদের বাজে কাজগুলোর দুর্বলতম, যে অস্ত্রাগার লুণ্ঠন হইয়াছে

কেউ ভাবতে পারেনা শূন্যস্থানে গ্যাছে আকাশযান

কেউ কথা রাখেনা তবু তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর জন্য এই গতি রাখি

সম্পত্তি গ্রহণের বোকা লক্ষ্য পৌঁছে গেছি

সুতরাং যদি অবৈধভাবে শিকার হয়, কবুল-

অনুভব করি আমাকে আগাতে হবে

আমার প্রথম স্মৃতিগুলি নষ্ট হওয়ার আগেই

প্রেমিক হয়ে ওঠা অবধি যা কিছু কার্যকর ছিল

পরিপূর্ণতার অনেক যমজ-

এবার বাস্তুতন্ত্রের উদ্বেল ঘেঁটে যাই-

প্রাণীর সাথে সম্পর্ক, কুকুরের সাথে নিঃশর্ত ভালবাসা

 

পরের বছর কী হবে তা জানার ভিত্তি নেই

তবু আপনি ফর্ম ভেঙে নির্মম গণহত্যা চালিয়ে দিতে পারেন

অবশ্যই আমাদের মাঠ,- মাঠ হয়ে উঠবে।

সাধারণ যারা চিৎকার করে

এবার তাদের জন্য কিছু রেখে যেতে পারেন

পুনরুদ্ধার করতে পারেন হিস্টিরিয়া

দুজনের চুলকানি চশমার অন্ধকারে

আমি কী কাঁদতে পারে দেখে বেঁচে গিয়েছিলাম

এবার বাকি রয়েছে যাপনের অংশ খতিয়ে দেখা

 

আমার ঘড়িতে এখন সকাল সাড়ে ন'টা

লিনিয়ার পল্লীতে আমি বসেছি এক স্ববিরোধী জানালায়

জরুরী কাজ সেরে নিতে

বাঁধাকপির নরম ভাঁজ নিংড়ে বুজে নিতে চাইছি

মাটির গুণাগুণ, সাব-সাহারান আফ্রিকাতে এগুলো কেমন হতে পারে

কুড়ি-দশকের মাঝামাঝি বদলে যাওয়া হাইওয়ে কোথায় নিয়ে যেতে পারে

অফ ট্রাক ট্রিগার টেপে ছিনালী করা নারীর ক্ষমতায়ন

আর আমার পুষ্ট চোখগুলো ভাবতেই খুলে যাচ্ছে

একবার সব ছেড়ে বিবসন হই

বিমানপোতের ধারে গুলি খাওয়া ভক্তদের মাঝে গড়িয়ে পড়ি

বাঘের ছাল পরে যারা এসেছে

আমি ঢুকে যাচ্ছি চিড়িয়াখানায় একসাথে সময় কাটাতে

আন্তঃসংযুক্ত সময়ে সত্য প্রবাহে

ক্ষুদ্রাকৃতি শুঁয়োপোকারা টেনে নিয়ে যাচ্ছে খাবার

ফরমায়েশে মেশাতে হবে টেনে নিতে হবে তাদের ঠাণ্ডা মদ

বিনোদন দিয়ে থাকেন যারা তাদের কাছে চালান দিতে হবে

স্ক্র্যাচিসহ স্ক্রিপ্ট

কার্বন অণুগুলি ভেঙে আমাদের পল্লীতে ঘুম হয়না

আমরা ছোট মন্ত্রণা ছল চাতুরী টপকে যাই

যত্ন নিতে গিয়ে আমাদের সম্পর্কে ঠাণ্ডা লাগে

দ্বন্দ্ব খুঁজছি না তবে কী  লজ্জা পাব

নিঃসন্দেহে লড়াইয়ের মানুষ শিফটে ঢুকে যায়

লিনিয়ার পল্লী খালি হতে সবই ফাঁকা লাগে

আজকাল ফাউ না হয়ে বিপর্যয়কর চেষ্টা করি নতুন আঙুর বাগান তৈরির

নেমে যাই পল্লীক্ষেতে, আর দেখতে থাকি এক লেডিবার্ড কি করে ঘুরে দেখছে আমাকে

আনন্দ গ্রেনেড হাতে মিশ্রিত তাঁর বারুদ রঙ

 

           

Copyright © 2020                                 Khairujjaman Sadak                                        Published 1st Sep, 2020.

image004

image005