কৌরব
অনলাইন
ধারাবাহিক
সংযোজন-১৮
জুলাই
২৪, ২০১৬
সূচি
কবিতা
বারীন
ঘোষাল
===
|
বারীন ঘোষাল কৌরব
পত্রিকার এমনই
এক
অপরিহার্য
গোড়াপত্তনকারী,
অন্তত এটুকু
না জানা ভারতীয়
বাঙালী তরুণ কবির
কাছে লজ্জার। বারীনের
জন্ম ১৯৪৪
সালে।
জীবনের
প্রায় সবটাই
জামশেদপুরে।
পেশায়
এঞ্জিনীয়র,
বর্তমানে অবসৃত
বারীন টাটা
মোটরে
এঞ্জিনীয়রিং
ম্যানেজমেন্টের
এক
গুরুত্বপূর্ণ
পদাধিকারী
ছিলেন
দীর্ঘকাল।
পরীক্ষামূলক
বাংলা কবিতা
নিয়ে কবি,
প্রাবন্ধিক বারীনের
কাজ
সর্বজনবিদিত।
‘অতিচেতনার
কবিতা’ ও
পরবর্তীতে
‘নতুন কবিতা’র
তাত্ত্বিক
ভিত্তির
অনেকটাই ওঁর
গড়ে তোলা।
অসংখ্য কাব্যগ্রন্থের
মধ্যে
অনেকগুলোই
বহুপঠিত, আলোচিত।
কয়েকটি বই
কৌরবের
দ্বিতীয়
প্রজন্মের বিশেষ
প্রিয় –
‘মায়াবী
শিমূম’, ‘হাশিস
তরনী’, ‘লু’, ‘এ
লুলু’, ‘কবিতা চালিশা’
প্রভৃতি। তরুণ কবিদের
সঙ্ঘে
সর্বদাই
প্রথম
আমন্ত্রিত
প্রবীণ কবি
বারীন ঘোষাল
আজও গদ্যে,
কবিতায় সমান
সঞ্চরমান,
আজও
জামশেদপুরবাসী
ও নিরন্তর
ভ্রাম্যমান।
|
কিছু
পুরনো নতুন
কবিতা
কবিতা
চালিশা
১
লোকাল
ঈশ্বরের
পেছনে
বৈদ্যুতিক
চাঁদ লেগেছে ভারি
হাহাকাশে
আজ ছোট্টমুখী
ফুটেছে
নরমবাঘের গাছে
চুনমুখ
সুলতাহীন
অবিন্যস্ত
শাড়ি
আলোর
শরমে পড়ে গেল
লোকাল
ঈশ্বর আর
লুকোলোনা
বাঘ
যে নরম হয়
কখনো নরম হয়
ফেরোমনের
স্ট্রিং তার
জংগানের
বাজনা
সুলতা
ও
বিদ্যুৎখানার
জলসাইন
কবিতা
চালিশা আমি
বারে বারে পড়ি
রোজ ভোরে
সচন্দ
ওয়েব থেকে
বিদ্যুৎ নহর
নামাই
মলাট
ছেঁড়া তমতমের
ভেতর ভেসে আসে
ত্রিকোণের
প্রত্যেকটি
সুলতা
চুপ
করে বসে শোনে
নরম বাঘের কথা
লোকাল
ঈশ্বরের কথা
সূর্যমুখীকে
ছোট্টমুখী
বলার মজাগুলো
১৯/১২/৯৯
কবিতা
চালিশা
২
আরো
কারণ আছে
গাছের
গ্যালারি
নড়বড়ে হওয়ার
শুকনো
কুশ থেকে শুরু
করা যাক
জুনলাইনে
আশ্চর্য এক
আলোয় বোহেম
মনে লয়
তো
কুশ কোন পুতুল
নয় তবু
কুশপুতুল
গাছ
গাছের
বাচ্চারাই তো
কুশপুতুলের
বাচ্চা
যেমন
প্রতীক
যেমন
প্রতীকের
বাবাকে আমি
মওসম লাগাই
বর্ষাব্যথা
হলে
তার
স্ট্রিং কয়লাভানা
নিভানা মদের
উস্ব উস্ব
কবিতার
কথাই বলছি
বাজারে
টাজারে
কয়লা
নাকি কোয়েল
কান
ফোঁস
ফস দপ ফসকাজনম
ট্রাই করতে
করতে
রোজ
ভোরে কুশাসনে
বসে আমি কবিতা
চালিশা পড়ি
আর
আমার কলম একটু
একটু করে শক্ত
হয় রোজ
গাছের
গ্যালারি
ছেড়ে যায়
গামিনীপাখিরা
১৯/১২/৯৯
সলমাজরির
বিরুদ্ধে দু
এক কথা
সেই
সোনাও নেই
রূপোও নেই
আড়কাঠিতে
আর
কাঠিটি বাজনা
বাজায়
অতঃপর
সেই হাতদুটোর
কি হল
কথার
খোঁজে মঞ্চ
বানালো কি
ব-য়ে
শূন্য লাগতেই
ভেসে ওঠে
ফোঁপরা
কলম্বাস
আর
শ্রীদেহে
বাজনা বাজে
হাতে
মুখে নাড়তে
থাকে বাতাস
কানে
কানে ওয়াহ হয়
শিশির
জন
বিজন না মানা
এদেশের শিশির
তো
কোথায়
গেল সলমাজরি
ওড়নাশা
ড়ির
বাণীহীন
মাছের
অন্যায় বলে
কথা
কবিয়াল
মদ
ছিনাই
বাদল ইত্যাদি
ফাঁপ
ছেড়ে দিলো
গল্পের
শব্দরেশের
শেষটুকু
ফুরিয়ে যায়
এই
দেশে বিজনে
বতনতর হয়ে বসে
এক
বিষণ্ণতা
এত
গভীর কথার
সলমাজরির
সুঁই কায়
ক্লিশে চলা না
আর
শেষ
গানটি থেকে
যায় মুখে মুখে
ছবিধান
ছবিধান রেএএএ
সিঁড়ি
আর অর্থের
মধ্যে মানে
মাঝখানে
শহর
খোলো চিতার
আলো
চিতারা
তার ছন্দ
বিকোণ
জলপড়ানো জ্বর
গ্লেসিয়ার
পেরোচ্ছে
রিক্ত
মানুষটা
বিছানা
ডিঙিয়ে গেল
শত
পতাকার মাঝে ঠিক
কোনখানে সে
ফুলও
ফুটলো
বোকারাও
দেখলো
হারা
মানুষটাকে
নিয়ে পদ্য
লিখবো না কি
যার
হাতে ছিলো ফুল
চোখে জল বুকে
অনন্ত আলো
তেমন
লোক কোথায়
সিঁড়িটাতো
খালি
খালি
বাতাস আসছে
যাচ্ছে তাতে
সুগন্ধ
গন্ধ
নিয়ে আরো কথা
ছিল আমাদের
পিঁপিড়া
নিয়ে যেমন
হাতিকাহিনীর
ডেসিবেল
ভুরভুর
কুবের আর
সুইজারল্যান্ডের
হনিমুন
গোপন
গূঢ় চাপাধামা
আর্থিক
গল্পগুলো
কবিতায় ঢুকতে
চাইলে
কি
করে আটকাবো
পাহাড় গিরতে
চাইলে আর্থে
অর্থ হয়ে
পেট
গিরতে স্বপ্ন
গিরতে চাইলে
চাওয়ার
তো শেষ নেই
আর
লোকটা সিঁড়ি
রাখার জায়গাই
পেলো না
১৪/০৫/০৭
বুড়ো
প্রজাপতি
নবীন
প্রজাপতিরা
বুড়োদের
কোথায় সরালো
কেউ
দেখলোনা
অকারণের
গান
জলের
মধু হয়ে ওঠা
রেলছন্দ
ঘুমজড়ানো
সূর্যপাত হল
লাজুক নেই-এ
ফটোগুলো
ফেলে দেয়াল
সরেছে পাহাড়
ঢালে
চূড়োয়
বরফপুরা
ময়
আর
ঝুরো বরফের
গামরু
স্কি
পায়ে নামছে
ফটোফাড়া
দম্পতি
ভুয়োকায়
বিপদের
দিনে
আশানন্দে
নামতে
নামতে পেটে
অমাখিল্লির
হরাপতন
কারাভাঙ
কারাভাঙ শব্দ
মানেহীন
নৌকোহারা ভাস
সরকারী
চাঁদের হাটে
ব্রেলনাচের
হাত
হাতে
হাতে
গণজোছনায়
রেখানো
পাততাড়ি
২৬/০২/০৪
প্রবলেম
মুক্তো
বিষয়ক
প্রবলেম হল
তার
উচ্চারণের
একটা মালা পরা
যায়না
একের
পর এক ঝিনুক
জোড়া কান
ব্রেনে
প্রবাল
বিন্দু
আমার
চিত্ররূপ
যেরকম
বানিয়েছো আর
কি
পুরনো
পক্ষরেখায়
গলছেও ফুটছেও
দৃষ্টি চোখে
বায়ু
নিরীশ্বর বায়ু
হাতুড়িকা
আর
রাগপ্রধানের
হাতেখড়ি শুরু
হল বলে
এবার
বন্ধে তুমি
বলো
আমার
প্রবলেমটা
শুনলে তো
তুমি
বলো আমার
শিক্ষা হলনা
কেন
যখন
ঝড় চলে যায়
দেবদারু
গাছটা
আবার
মাথা তুলে
দাঁড়ায়
মুনিয়া
পাখিটাকেই
আমার টুনটুনি
বলা
শ্মশানে
চা সিঙারা
খেতে খেতে
এই
যে ভাবছি
বন্ধের
সঙ্গে এসবের
সম্পর্কই বা
কি
আমাদের
হাসপাতালে
আমরাই বিদেশী
হয়ে গেলাম
১১/১০/২০০৬
যাদুঘর
গিলোটিনে
মাথা রেখে মনে
হচ্ছে রাজা
ধীর
এক আগ্রহে সম্পন্ন
যাদুঘরে
সংসারে
রাজা
হয়ে উঠলাম এক আশ্চর্য
নগরীতে।
শেষ
হয়ে যাবো
চেনা
ও বিকাশশীল ভোর
দেখতে দেখতে
শেষ হয়ে
যাবো
খবরের
কাগজে মোড়া জনহীন
আশ্চর্য অমলিন
নগরী
আমাকে
রাজা হয়ে উঠতে
দিল
শেষ
হয়ে যাবার জন্য
দিল এই প্রতিমা।
হাশিস
তরণীঃ ১৭-৮-৮৬
মরুবিজয়ের
গান
ঘাসবোনার
কাছে আসি
অন্ধকার,
সুগম সঙ্গীতের
কাছে
মূর্খ
হাসি লাগে কপিকলে
ঘোরে,
ফেঁসে যাওয়া দড়ির
ঘষটানি
পাতাল
গহ্বরে
রয়ে
যায়
অতীতের
ঘাসবনে ফিরে ফিরে
আসি
প্রভাত
হাসিনী হয়ে
প্রভাত
ফেরীর কাছে আবার
বালিকা সেজে আসা
ও কার
প্রেমিকা শুয়ে
আমি নাতো ব্যাঘ্রসখার
ঘাসে
মিশে ও-হাসপাতাল,
বন, দুন্দুভি
ভেঙো
ওকে ভেঙো ওকে ভেঙো
সম্মতি
ছাড়াই কেউ গান
গেয়ে ওঠে
দৃশ্যরূপে
হাত রাখে
নষ্টকপিকলে
এক প্রবর সন্ন্যাসী
যেন
শিকড়ের নিচে পৌঁছে
দেবে
মরুবিজয়ের
গান ঠোঁটে লেখা
অযুত সন্তানে
ক্যামেরুনে
ইথিওপিয়ায় বাস
চলে গেল সন্ধ্যার
মুখে
গুহাগায়ে
প্রাচীন বাঘের
ছবি জানে বায়ুবাসি
ফেরত
দেবেনা কিছু
অন্ধকারে
জেগে উঠে সময়ের
দড়িগুলো খাবে
হাশিস
তরণীঃ ২৮-৮-৮৬
ছবি
নিরক্ষর
শব্দগুলো সাজিয়েছি
শব্দহীন
করেছি তাদের,
ঘরছাড়া,
হতভাগা মানুষের
ঘাড়ে হাত দিয়ে
এত
কি বলছ
মোছ
বেরোবার
ছবি এঁকে প্রাইজ
নিয়ে আসি
এসো
আঁকি
আগুনের
নিরাবেগ ছবি আর
মেয়েচিতা
এই
তো বাঃ! আগুনের
মধ্যে চিতা
ওপারে
দাঁড়িয়ে বাপ বিহ্বল আপেল
খাচ্ছে একা
শব্দহীন।
ভাষায় বিকাশ
এসো তুলি এসো
কে
মরেছে কার বাপ
সূর্য্য
বিকাশের ছবি পরিষ্কার
রেলিঙে সাজাই
হাশিস
তরণীঃ ৩-৫-৮৮
গাছ
গাছে
নতুন পাতা এসেছে
সবুজ
চালিসা বন-সাইজের
জানালায়
বাইরে
চুয়াল্লিশ ডিগ্রি
পরিযায়ী গরম
অভিজ্ঞতায়
ঝরা পাতার গুঁড়োয়
হলুদ
হালুম শব্দে বিষ্ঠা
পড়ল, আবার
এসব
এখনকার ব্যাপার,
শীতে বা বর্ষায়
আবার
অন্যরকম দেখতে
পাই
নেহাত
শিক্ষামূলক বা
নিছকই প্রাণদায়ী
এমন
কি চোখসুখের কথাও
যদি হত
যদি
হত চরবাহার কাছে
ধ্বংস একটা আওয়াজ
কিছুতেই
মেনে নিতে পারিনা
আমি আর গাছ
সম্পর্কহীন
ভাবে পাশাপাশি
থাকবো
গাছ
আমাকে দেখবেনা
কিছু শিখবেনা আমার
কাছে
জানতে
চাইবেনা কেমন আছি
কান্না
সম্পর্কে অনেক
কিছু জেনেও
মৃত্যু
সম্পর্কে অনেক
কিছু জেনেও
আমার
কোন কাজেই যে লাগছে
না এসব
গাছের
গোড়ায় জল ঢালার
সময় একা
মাটিটা
নরম করে দেবার
সময় বিষণ্ণ
একটা
হাতও কি কাঁধে
রাখা যায় না
বলা
যায় না—ধন্যবাদ,
কি ছবি দেখছো, কত
পাতায়।
হাশিস
তরণীঃ ২৩-৪-৮৯
===
Copyright
© 2016 Barin Ghosal Published 24th July, 2016.