HOMEPAGE

 

কৌরব অনলাইন ধারাবাহিক সংযোজন-১৫

মে ১৫, ২০১৬

 

সূচি

   

কবিতা

অনিন্দিতা গুপ্ত রায়

 

=== 

 

 

নিন্দিতা গুপ্ত রায়-এর জন্ম মালদহ শহরে। শিক্ষা, বিবাহ ও চাকরি সূত্রে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন শহর পার করে জলপাইগুড়ির বাসিন্দা। ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি থেকে ওঁর লেখালেখি শুরু, ছাত্রাবস্থামূলত কবিতা। প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ পায় ২০০১-এ। তারপর গত পনেরো বছরে আটটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত। শুধুমাত্র সংখ্যাতেই প্রমাণিত হবে অনিন্দিতার কাব্যোর্বরতা, যদিও পাশাপাশি এটাও বলার অপেক্ষা রাখেনা যে অনিন্দিতার কবিতা প্রায় সমানভাবে সুদক্ষ; নিজস্বতা ও নান্দনিকতায় উৎকৃষ্ট।  সর্বশেষ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটির নাম—“আছি”। এবারের কবিতাক্রমে কবিতা এক অববাহিকার রূপ নিয়েছে।

 

অববাহিকার লেখাগুলি                                                                           

 

 

স্পর্শর কোনো অনুবাদ নেই

তাকে ছুঁয়ে ফেলেও ঠোঁট

উচ্চারণের স্পর্ধা সরিয়ে রাখে

স্মৃতির দেরাজে

জিভের ভেতর দিয়ে শুধু

তীব্র শিশিরপাত গড়িয়ে গড়িয়ে

ব্যথা---আহ্‌, ভারি হয়ে থাকে

 

 

 

সহ্য শেখার জন্য

এতরকম কুমিরডাঙ্গা

যতটা স্বচ্ছ হলে নিজেকেই দেখা

ততটাও আলো নই

দূর থেকে শুধু পড়ে নিতে চাই

তোমার মুখের কাটাকুটি

পুরোটা অসহ্য হতে হতে

ছায়াকেই ডেকে বলিচলো খেলি অদলবদল

 

 

 

দুটো হাতের বিস্তারে

তখন পাখি

অবিশ্বাস্য উড়ানের গল্পে

ঝাঁপ---নির্ভার; সীগাল ও সমুদ্র।

গতজন্মের অসমাপ্ত একটা গান

ঠোঁট ফিরিয়ে দিল, নিঁখুত

সরগম সেজে উঠলে

বিকেলের দিক থেকে উলটপুরাণ

হাতছানির মন্ত্রে স্বপ্নাদিষ্ট

ফিরে ফিরে যাচ্ছিল ওঠানামার পথে

হারানো জলোচ্ছ্বাস হঠাৎ খুঁজে পেয়েছিল, পাখিটি

 

 

 

রোদন ভরা এ বসন্ত”—

গাইতে গাইতে বারবার চোখ খুলে রাখছে দৃষ্টি

আর কি আশ্চর্য---ছিটকে পড়ছে লবণ

চুম্বনমুহূর্তের অন্ধতায় সোনালি হয়ে আছে যেন

কত কত বছরের স্থিতিজাড্যরা

ঠেলাঠেলি এ ওর জায়গা কেড়ে নিতে

আঁকড়ে ধরেছে হাওয়ার আঙুল

শুধু ভয়ানক সন্দেহজনক একটি রুমালের গল্পে

সামান্য কান্না লেখা হলো, উপসংহারে

 

 

 

ব্যথা হয়ে উঠছে জল

তাকে পেরিয়ে এলে ব্যথাটিও ছায়াময়

গলে গলে পড়ে যাবে যেন

সিঁড়িঘর পার করে

রেখে আসা যে দ্রবণের মিছরি ও জল

আদানপ্রদানে তার আপাত সরল

মিঠে জিভ লোণা জিভ কুসুমিত জিভ

কিভাবে বাচাল এত, এতটা ধারালো

 

 

 

অনুচ্চারিত একটা স্মৃতি পুড়ে যাচ্ছে

একটু পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে

মিথ্যে ধোঁয়ার মেঘে মেঘে

বেলা ও বিরক্তি ক্রমপ্রসরণগুলি  

শহর উপুড় জলে গ্লানি ভিজলনা

হাততালিমগ্ন সন্ধ্যের তফাতে একা

শূন্য চেয়ার, স্তব্ধতা দু মিনিট 

 

 

 

একটা রাত্রি কত দীর্ঘ হতে জানে

কত অন্ধকার

খোলস খুলে এই এত নিবিড়তা

পালাতে পালাতে তার রং

রূপে সনাতনে কিছু মাখামাখি

 

 

 

অভ্যেস বদলাতে যতটুকু বিরতিপ্রবন

সেই অনায়াসের মধ্যে আচমকা

উঁকি মেরে চমকে উঠলো

নির্ধারিত পাখিডাক,

তার কোনও খাঁচা নেই, দাঁড় নেই

গলা সাধা ভোর নেই

আলিঙ্গনের ভেতর হাওয়া ছটফট করে

আরো আরো মরে যেতে চাইছিল তখন

 

 

 

চিৎকার খুবলে নিল শব্দহীনতা

কিভাবে একটা ফেটে পড়াকে

সংহত করে বিন্দুমাত্র তীব্র করা যায়

তার অনুশীলন করে করে স্থির

জড়ো হচ্ছে লীণতাপ, আলো আর বমনেচ্ছা

এরপর বন্ধ দরজা খুলে

হাস্য প্রদর্শনী---

আবহসঙ্গীতে চাঁদ, আহা চন্দ্রমা

 

 

 

সামান্য একটা তারিখ বই তো নয়

বীজ নেই, শাঁস নেই, সম্ভাবনা নেই

আঙুরফল আর শেয়ালের গল্পের শেষটা

অজুহাত হয়ে বেজেই চলেছে

শুকনো জিভ খুলে হাওয়া থেকে চেটে নিচ্ছি লবণ

এখন স্পষ্ট হলো পুরোনো হেঁয়ালি--- 

চোখই সমুদ্রের সর্টকাট রুট

জলের ধর্ম সরলতা, সে কি জানে?

 

===

 

Copyright © 2016     Anindita Gupta Roy           Published 15th May, 2016.