HOMEPAGE

 

কৌরব অনলাইন ধারাবাহিক সংযোজন-১৪

এপ্রিল ৩০, ২০১৬

 

সূচি

   

কবিতা

শবরী রায়

 

===  

 

বরী রায়-এর উত্তরবঙ্গে জন্ম। প্রাণীবিদ্যা নিয়ে পড়াশুনো। সংগীত ও  সাহিত্যচর্চা ও প্রিয় বিষয়।  কিছুবছর দিল্লী ও মুম্বাই বাস করার পর অতি সম্প্রতি কলকাতাবাসী। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ এবং বেশকিছু  অনুবাদ প্রকাশিত। কবিতার বই - বৃষ্টির তাঁবুর ভেতর, শরীরের বাতিঘর, এসরাজে বেজেছে নীল সুর, শঙ্খ লেগেছে চাঁদে এবং একটি গল্পেরর বই নূপুর খুলে রাখি এখনো পর্যন্ত প্রকাশিত। মুম্বাই থেকে প্রকাশিত লোনাহাওয়া পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত।

 

সফরের ধূপছায়া

                                                                           

 

১)

 

   ছিল। এখন নেই।

  কমলালেবু রঙের গাছ

       গাঢ় নীল পাতা

 

শ্বেতপাথরের টেবিল

ধোঁয়া ওঠা সেদ্ধ মাংস

     আর গোলমরিচ

 

এখন না থাকলেও জ্বর ছিল

    মরীয়া রোমকূপ এবং

         কাঁটাসহ বৃন্ত

 

জ্বর বাড়ে এবং কমে

  কমলালেবু দূরত্ব এখন নীল

 

 

২)

 

 টমেটো আর শুকনো লঙ্কার লাল মিশ্রণ

         ঘন থেকে ঘনতর হয়

            মাধ্যম উষ্ণ তেল

 

সস্ তৈরির সরল প্রক্রিয়া

   কিচেন চিমনির নীচে

 

     বিচ্ছেদের ওপার থেকে

পরস্পরকে দ্যাখে নুন-চিনির বয়াম

 

লালন ফকিরের গান

   ডানা ঝাপটে উড়ে যায়

      উত্তরের জানলা দিয়ে

 

বহুতলের কাঁচে থমথম করে দুপুর

 

 

৩)

 

  মাশরুমের সঙ্গে ক্যাপসিকামের

     বহুদিন পর দ্যাখা

জ্বলন্ত ফ্রাইং প্যান আগুন সংবাদ পাঠ করে

 

 অলিভ অয়েল বাষ্প মাখছে

     গুরুত্বপূর্ণ মুখগুলো

 

দোলনায় দুলছে ঘুমভাঙা শিশুর কান্না

   ক্যাপসিকাম ভ’রে ওঠে

       রসালো মাশরুমে

 

       সবুজ আলো নিভে যায়

ডিনার টেবিলে উষ্ণ সফেদ প্লেট

       পায়ের শব্দ শোনে

 

 

৪)

 

 জল ফুটছে

  নীল ফ্লেম, তত নীল নয়

 

দার্জিলিং চায়ের সুগন্ধ

 পাক দিয়ে ঘোরে বাতাসিয়া লুপ

 

সোনালি রং ধোঁয়া

   গিলে ফ্যালে দুরন্ত টি-পট

স্নিগ্ধ  টি-কোজি তাকে ছুঁয়ে থাকে

 

পাশে পড়ে থাকে শুকনো লেমনগ্রাস

  এবং একটি ধারালো কাঁচির বিভঙ্গ

 

 

৫)

 

খেলা জমে উঠেছে

    মুখোশের আদানপ্রদান

 

নীল মুখোশ হলুদ মুখোশের

   ঘোরাফেরা এবং স্থানবদল

 

শীতকালীন ম্লান সূর্য সরলরেখায়

    ধোঁয়াশার ওপর ফুঁ দ্যায়

 

কমলালেবুর খোসা দিয়ে মুখ ঢেকে রাখি

  কোয়া দিয়ে গড়ায় বিষাদ রস ও শৃঙ্গার

 

জানলার কাঁচ মুছতে গেলে

  কাঁচও আমাকে মোছে ধীরে.......

 

 

৬)

 

আমার সমস্ত রং শুষেছে

      পাতাবাহারের জটিলতা

রঙিন নতজানু, কালো প্রজাপতি

 

তোমাকে পাওয়ার এবং

     না পাওয়ার পর ছড় টানি

 

চামড়া ফুটে বেরোয় মরচে

  গন্ধে গুনগুন করে রক্তধারা

 

গান সর্বদাই একটা অঙ্ক.......

 

 

৭)

 

দুপুরের ঘুলঘুলিতে পায়রা গোঙায়

     আর অবদমিত শোনে

 

হৃৎপিন্ডে ওঠে পায়রার ঢেউ

   উজ্জ্বল গোলাপি ছাই

 

উপুড় করা রোদে ধানবীজ

  আর মরা পাটক্ষেতের নেশা থেকে

 

রূপোলী রূপোলী শহরে

  নোনাজলে তৈরি হওয়া ক্ষত

 

মানসিংহের তরবারি দেখেছি

  দু-বাহু দেখিনি কখনো

 

 

===

 

Copyright © 2016     Sabari Roy           Published 30th April, 2016.